Accident, Accidens: অবান্তর লক্ষণ

 যুক্তিবিদ্যায় বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত একটি শব্দ। একটি পদের গুণ যদি এমন হয় যে, গুণটি কিংবা গুণসমূহ উক্ত পদের জাত্যর্থ বা কানোটেশনের অন্তর্ভূক্ত নয়, জাত্যর্থ থেকে উদ্ভূতও নয়-অর্থ্যাৎ উক্ত গুণকে পদের জাত্যর্থ থেকে অনুমান করা চলে না; কিন্তু গুণটিকে পদের মধ্যে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে দেখতে পাওয়া যায়, তা হলে এরুপ গুণটিকে পদের মধ্যে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে দেখেতে পাওয়া যায়, তা হলে এরূপ গুণকে উক্ত পদ বা টার্মের এ্যাকসিডেন্ট বা এ্যাকসিডেন্স বলা হয়। বাংলাতে এক ‘অবান্তর লক্ষণ’ বলা যায়। অনেক মানুষের ‘চুল কালো’, এই দৃষ্টান্তে চুল কালো বা কালো চুল থাকার গুণটি মানুষ পদের অবান্তর লক্ষণ। এ গুণটি ‘মানুষ’ হওয়ার অপরিহার্য গুণ হচ্ছে ‘জীবন্তু এবং যুক্তিবাদিতা’। অবান্তর লক্ষণ একটি পদের বিচ্ছেদ্য কিংবা অবিচ্ছেদ্য গুণ বলেও বিবেচিত হতে পারে। যে অবান্তর লক্ষণ পদের মধ্যে স্থায়ীভাবে দেখা যায়, তাকে অবিচ্ছেদ্য অবান্তর লক্ষণ বলে। যেমন কবি নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহন করেছিলেন। একটি বিশেষ সনে জন্মগ্রহণ করার গুণটি উপরোক্ত পদটি অবিচ্ছদ্য অবান্তর লক্ষণ।

দর্শনশাস্ত্রেও ‘এ্যাকসিডেণ্ট’ বলতে অস্থায়ী, অনিত্য এবং অপরিহার্য গুণকে বুঝায়। এদিক থেকে নিত্যসত্তা বা পরম সত্তার বিপরীত হচ্ছে অনিত্যসত্তা বা এ্যাকসিডেণ্ট। পদের গুণের ক্ষেত্রে অপরিহার্য এবং অপরিহার্যের পার্থক্য প্রথম প্রকাশ করে দার্শনিক এ্যারিস্টোটল। ‘এ্যাকসিডেন্ট’ শব্দের ব্যবহার তার রচনাবলীতেই প্রথম দেখা যায়। পরবর্তীকালে মধ্যযুগের স্কলাসটিক বা ধর্মীয় দর্শনের মধ্যে ‘এ্যাকসিডেন্ট’-এর ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। সপ্তদশ এবং অষ্টাদশ শতকের দর্শনেও বস্তুর অপরিহার্য এবং অপরিহার্য গুণের আলোচনার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। কিন্তু দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের মতে কোনো বিশেষ বস্তুই যেমন অপর কোনো বিশেষ বস্তু থেকে চরমভাবে বিচ্ছিন্ন নয়, তেমনি বস্তুর কোনো গুণকে অপর কোনো বিশেষ বস্তু থেকে চরমভাবে বিচ্ছিন্ন নয়, তেমনি বস্তুর কোনো গুণকে অপর কোনো গুণের সঙ্গে তুলনাক্রমে চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদ্য গুণ বলা চলে না।


তথ্যসূত্র

১. সরদার ফজলুল করিম; দর্শনকোষ; প্যাপিরাস, ঢাকা; জুলাই, ২০০৬;

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال