ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার: ইতিহাস ও অবদান

 


ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার: ইতিহাস ও অবদান

কাস্টম URL স্লাগ: nyaya-darshaner-bhashyakar
মেটা বিবরণ: ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার কে কে? জানুন এই প্রাচীন দর্শনের ইতিহাস এবং প্রধান ভাষ্যকারদের অবদান সম্পর্কে।
মেটা কিওয়ার্ড: ন্যায় দর্শন, ভাষ্যকার, গৌতম মুনি, ন্যায়সূত্র, বাৎস্যায়ন, উদ্দ্যোতকার, বাচস্পতি মিশ্র, উদয়ন, গঙ্গেশ, গদাধর ভট্টাচার্য, ভারতীয় দর্শন, নব্য ন্যায়, যুক্তিবিদ্যা, জ্ঞানতত্ত্ব

ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার কে কে?

ন্যায় দর্শন ভারতীয় দর্শনের ছয়টি প্রধান আস্তিক দর্শনের একটি, যা যুক্তিবিদ্যা, জ্ঞানতত্ত্ব এবং তর্কশাস্ত্রের উপর ভিত্তি করে গঠিত। এই দর্শনের মূল গ্রন্থ, ন্যায়সূত্র, গৌতম মুনি (অক্ষপাদ গৌতম নামেও পরিচিত) রচনা করেছিলেন বলে মনে করা হয়, যা খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দী থেকে খ্রিস্টীয় ২য় শতাব্দীর মধ্যে রচিত হয়েছিল। এই সূত্রগুলি সংক্ষিপ্ত এবং জটিল হওয়ায় বিভিন্ন ভাষ্যকার তাদের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে ন্যায় দর্শনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। নিম্নে প্রধান ভাষ্যকারদের নাম ও তাদের অবদানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:

  • বাৎস্যায়ন (৫ম শতাব্দী): ন্যায়ভাষ্য রচনাকারী, ন্যায় দর্শনের প্রথম ভাষ্যকার।
  • উদ্দ্যোতকার (৬ষ্ঠ শতাব্দী): ন্যায়বার্তিক রচনাকারী, বৌদ্ধ সমালোচনার বিরুদ্ধে ন্যায় দর্শনের প্রতিরক্ষা করেছেন।
  • বাচস্পতি মিশ্র (৯ম শতাব্দী): ন্যায়বার্তিকতাত্পর্যটীকা রচনাকারী, ন্যায় দর্শনের সাথে অন্যান্য দর্শনের সমন্বয় সাধন করেছেন।
  • উদয়ন (১০ম শতাব্দী): ন্যায়কুসুমাঞ্জলিআত্মতত্ত্ববিবেক রচনাকারী, ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
  • গঙ্গেশ উপাধ্যায় (১৩শ শতাব্দী): তত্ত্বচিন্তামণি রচনাকারী, নব্য ন্যায় দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা।
  • গদাধর ভট্টাচার্য (১৭শ শতাব্দী): শক্তিবাদঅনুমানখণ্ড রচনাকারী, নব্য ন্যায়ের জটিল বিশ্লেষণে অবদান।

ন্যায় দর্শনের পরিচয়

ন্যায় দর্শন, যার নাম সংস্কৃত শব্দ “ন্যায়” থেকে এসেছে, যার অর্থ “ন্যায়বিচার” বা “যুক্তি”, ভারতীয় দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এটি প্রধানত জ্ঞানের উৎস (প্রমাণ), যুক্তিবিদ্যা এবং তর্কশাস্ত্রের উপর কেন্দ্রীভূত। ন্যায় দর্শনের মূল উদ্দেশ্য হলো সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষের দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি লাভ করা, যা অজ্ঞতার কারণে সৃষ্ট হয়। এই দর্শন চারটি প্রমাণকে স্বীকার করে: প্রত্যক্ষ (প্রত্যক্ষণ), অনুমান (অনুমিতি), উপমান (তুলনা) এবং শব্দ (বিশ্বস্ত সাক্ষ্য)।

ভারতীয় দর্শনে ভাষ্যের ভূমিকা

ভারতীয় দর্শনে ভাষ্য বা টীকা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সূত্রগুলি সাধারণত সংক্ষিপ্ত এবং জটিল হয়, তাই ভাষ্যকাররা এগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন। ন্যায় দর্শনে ভাষ্যকাররা শুধুমাত্র সূত্রগুলির অর্থ ব্যাখ্যা করেননি, বরং বৌদ্ধ, জৈন এবং অন্যান্য দর্শনের সমালোচনার বিরুদ্ধে ন্যায় দর্শনের প্রতিরক্ষা করেছেন। এই ভাষ্যগুলি ন্যায় দর্শনের বিভিন্ন দিককে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছে এবং এর বিকাশে সহায়তা করেছে।


ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের বিস্তারিত আলোচনা

ন্যায় দর্শনের ইতিহাস ও ভাষ্যকারদের শ্রেণিবিভাগ

ন্যায় দর্শনের ইতিহাসকে দুটি প্রধান পর্যায়ে ভাগ করা যায়: প্রাচীন ন্যায় (প্রাচীন-ন্যায়) এবং নব্য ন্যায় (নব্য-ন্যায়)। প্রাচীন ন্যায় পর্যায়ে গৌতম মুনির ন্যায়সূত্র এবং এর প্রাথমিক ভাষ্যকারদের কাজ অন্তর্ভুক্ত। নব্য ন্যায় পর্যায় শুরু হয় গঙ্গেশ উপাধ্যায়ের সময় থেকে, যিনি ১৩শ শতাব্দীতে এই দর্শনের নতুন দিক প্রতিষ্ঠা করেন। নিম্নে ভাষ্যকারদের সময়কাল এবং তাদের প্রধান কাজের একটি সারণী দেওয়া হলো:

ভাষ্যকার সময়কাল প্রধান গ্রন্থ অবদান
বাৎস্যায়ন (Vātsyāyana) ৫ম শতাব্দী ন্যায়ভাষ্য (Nyāyabhāṣya) ন্যায়সূত্রের প্রথম বিস্তারিত ভাষ্য, দর্শনের ভিত্তি স্থাপন।
উদ্দ্যোতকার (Uddyotakara) ৬ষ্ঠ শতাব্দী ন্যায়বার্তিক (Nyāyavārttika) বৌদ্ধ সমালোচনার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা, ন্যায় দর্শনের বিশ্লেষণ।
বাচস্পতি মিশ্র (Vācaspati Miśra) ৯ম শতাব্দী ন্যায়বার্তিকতাত্পর্যটীকা (Nyāyavārttikatātparyatīkā) ন্যায় ও অন্যান্য দর্শনের সমন্বয়, জ্ঞানতত্ত্বের গভীর বিশ্লেষণ।
উদয়ন (Udayana) ১০ম শতাব্দী ন্যায়কুসুমাঞ্জলি (Nyāyakusumāñjali), আত্মতত্ত্ববিবেক (Ātmatattvaviveka) ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ, ন্যায় ও বৈশেষিক দর্শনের সমন্বয়।
গঙ্গেশ উপাধ্যায় (Gaṅgeśa Upādhyāya) ১৩শ শতাব্দী তত্ত্বচিন্তামণি (Tattvacintāmaṇi) নব্য ন্যায় দর্শনের প্রতিষ্ঠা, যুক্তিবিদ্যার নতুন পদ্ধতি।
গদাধর ভট্টাচার্য (Gadādhara Bhattācārya) ১৭শ শতাব্দী শক্তিবাদ (Śaktivāda), অনুমানখণ্ড (Anumānakhaṇḍa) নব্য ন্যায়ের জটিল বিশ্লেষণ, ভাষা ও যুক্তির তত্ত্ব।

প্রধান ভাষ্যকারদের অবদান

১. বাৎস্যায়ন (Vātsyāyana)

বাৎস্যায়ন, যিনি পক্ষিলস্বামিন নামেও পরিচিত, ৫ম শতাব্দীতে ন্যায়সূত্রের উপর প্রথম বিস্তারিত ভাষ্য ন্যায়ভাষ্য রচনা করেন। এই ভাষ্য ন্যায় দর্শনের মূল সূত্রগুলির ব্যাখ্যা প্রদান করে এবং এর ১৬টি পদার্থ (শ্রেণিবিভাগ) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে। বাৎস্যায়ন জ্ঞানের উৎস (প্রমাণ) এবং তাদের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি ন্যায় দর্শনকে একটি স্বতন্ত্র দার্শনিক শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর কাজ পরবর্তী ভাষ্যকারদের জন্য একটি ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

২. উদ্দ্যোতকার (Uddyotakara)

উদ্দ্যোতকার ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে বাৎস্যায়নের ন্যায়ভাষ্যের উপর ন্যায়বার্তিক নামক একটি উপভাষ্য রচনা করেন। তিনি বৌদ্ধ দার্শনিক দিগ্নাগের সমালোচনার বিরুদ্ধে ন্যায় দর্শনের প্রতিরক্ষা করেন। উদ্দ্যোতকার ন্যায় দর্শনের যুক্তিবিদ্যা এবং জ্ঞানতত্ত্বের বিভিন্ন দিককে আরও স্পষ্ট করেন। তিনি প্রত্যক্ষণ এবং অনুমানের প্রকৃতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং ন্যায় দর্শনের বৈশিষ্ট্যগুলিকে আরও শক্তিশালী করেন।

৩. বাচস্পতি মিশ্র (Vācaspati Miśra)

বাচস্পতি মিশ্র, ৯ম শতাব্দীর একজন বহুমুখী দার্শনিক, উদ্দ্যোতকারের ন্যায়বার্তিকের উপর ন্যায়বার্তিকতাত্পর্যটীকা রচনা করেন। তিনি ন্যায় দর্শনের সাথে সাংখ্য, যোগ এবং মীমাংসা দর্শনের সমন্বয় সাধন করেন। তাঁর ভাষ্যে ন্যায় দর্শনের প্রমাণ এবং জ্ঞানতত্ত্বের গভীর বিশ্লেষণ রয়েছে। বাচস্পতি মিশ্র বৌদ্ধ দার্শনিক ধর্মকীর্তির সমালোচনার জবাব দেন এবং ন্যায় দর্শনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ন্যায়সূচিনিবন্ধ নামক আরেকটি গ্রন্থও রচনা করেন।

৪. উদয়ন (Udayana)

উদয়ন, ১০ম শতাব্দীর একজন প্রখ্যাত দার্শনিক, ন্যায় ও বৈশেষিক দর্শনের সমন্বয় সাধন করেন। তিনি ন্যায়কুসুমাঞ্জলি রচনা করেন, যেখানে তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য যুক্তিবিদ্যার মাধ্যমে নয়টি প্রমাণ উপস্থাপন করেন। তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ আত্মতত্ত্ববিবেক বৌদ্ধ দর্শনের নাস্তিকবাদের বিরুদ্ধে আত্মার অস্তিত্ব প্রমাণ করে। উদয়নের কাজ নব্য ন্যায় দর্শনের পথ প্রশস্ত করে। তিনি ন্যায়বার্তিকতাত্পর্যপরিশুদ্ধি নামক একটি ভাষ্যও রচনা করেন।

৫. গঙ্গেশ উপাধ্যায় (Gaṅgeśa Upādhyāya)

গঙ্গেশ উপাধ্যায় ১৩শ শতাব্দীতে নব্য ন্যায় দর্শনের প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর তত্ত্বচিন্তামণি নামক গ্রন্থ ন্যায় দর্শনের একটি যুগান্তকারী কাজ। এই গ্রন্থে তিনি জ্ঞানতত্ত্ব, যুক্তিবিদ্যা এবং ভাষার দর্শনের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেন। গঙ্গেশের কাজ ন্যায় দর্শনকে আরও সূক্ষ্ম এবং বিশ্লেষণাত্মক করে তোলে। তাঁর গ্রন্থ চারটি খণ্ডে বিভক্ত: প্রত্যক্ষখণ্ড, অনুমানখণ্ড, উপমানখণ্ড এবং শব্দখণ্ড।

৬. গদাধর ভট্টাচার্য (Gadādhara Bhattācārya)

গদাধর ভট্টাচার্য, ১৭শ শতাব্দীর নব্য ন্যায় দার্শনিক, তাঁর শক্তিবাদ এবং অনুমানখণ্ড গ্রন্থের জন্য বিখ্যাত। তিনি রঘুনাথ শিরোমণির তত্ত্বচিন্তামণির উপর ভাষ্য রচনা করেন, যা গদাধরী নামে পরিচিত। তাঁর কাজ নব্য ন্যায়ের জটিল বিশ্লেষণ এবং ভাষার দর্শনের উপর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। গদাধরের শক্তিবাদ শব্দের শক্তি বা অর্থবোধক ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করে, যা ভারতীয় দর্শনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ঐতিহাসিক ও দার্শনিক গুরুত্ব

ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকাররা শুধুমাত্র সূত্রগুলির ব্যাখ্যাই করেননি, বরং এই দর্শনকে সমৃদ্ধ করেছেন। বাৎস্যায়ন এবং উদ্দ্যোতকার প্রাচীন ন্যায়ের ভিত্তি স্থাপন করেন, যখন বাচস্পতি মিশ্র এবং উদয়ন এটিকে অন্যান্য দর্শনের সাথে সমন্বয় করেন। গঙ্গেশ এবং গদাধর নব্য ন্যায়ের মাধ্যমে যুক্তিবিদ্যা এবং জ্ঞানতত্ত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। এই ভাষ্যকারদের কাজ ভারতীয় দর্শনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে।

সারাংশ

ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকাররা এই দর্শনের বিকাশে অমূল্য অবদান রেখেছেন। তাদের কাজের মাধ্যমে ন্যায় দর্শনের বিভিন্ন তত্ত্ব এবং সিদ্ধান্ত আরও স্পষ্ট এবং গভীর হয়েছে। এই পোস্টে আমরা বাৎস্যায়ন, উদ্দ্যোতকার, বাচস্পতি মিশ্র, উদয়ন, গঙ্গেশ এবং গদাধর ভট্টাচার্যের অবদান নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদের গ্রন্থ এবং ভাষ্য ন্যায় দর্শনের ইতিহাসে একটি অমর স্থান দখল করে আছে।

ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার: ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর



🧠 ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার: ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

❓ প্রশ্ন ✅ উত্তর
1. ন্যায় দর্শনের প্রধান ভাষ্যকার কে ছিলেন? বাৎস্যায়ন ছিলেন ন্যায়সূত্রের প্রথম ও প্রধান ভাষ্যকার।
2. বাৎস্যায়ন কোন শতকে ন্যায়ভাষ্য রচনা করেন? ৫ম শতকে।
3. উদ্দ্যোতকার কী ধরনের ভাষ্য রচনা করেন? তিনি বাৎস্যায়নের ভাষ্যের ওপর “ন্যায়বৃত্তি” নামক টীকাভাষ্য রচনা করেন।
4. গঙ্গেশ উপাধ্যায়কে নব্য ন্যায়ের প্রবর্তক বলা হয় কেন? কারণ তিনি “তত্ত্বচিন্তামণি” রচনা করে ন্যায় দর্শনের বিশ্লেষণধর্মী ধারা শুরু করেন।
5. বাচস্পতি মিশ্র ন্যায় দর্শনের কোন দিকগুলির উপর আলোকপাত করেন? মূলত প্রমাণতত্ত্ব ও দার্শনিক যুক্তি বিশ্লেষণে তার অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
6. উদয়নের ন্যায়কুসুমাঞ্জলি কী বিষয়ে রচিত? ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের যুক্তিভিত্তিক দর্শন।
7. গদাধর ভট্টাচার্যের অবদান কীভাবে নব্য ন্যায়কে সমৃদ্ধ করে? তিনি গঙ্গেশের পর দর্শনচিন্তায় বিশ্লেষণ ও টীকা রচনার মাধ্যমে যুক্তিবিদ্যার বিকাশ ঘটান।
8. ন্যায়সূত্রের রচয়িতা কে? আদি ঋষি গৌতম।
9. ন্যায় দর্শনের সূত্র কেন ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয়? কারণ সূত্রগুলো সংক্ষিপ্ত ও গূঢ়; ভাষ্য ছাড়া বোঝা কঠিন।
10. প্রাচীন ন্যায় ও নব্য ন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য কী? প্রাচীন ন্যায় সরল, নব্য ন্যায় বিশ্লেষণধর্মী ও জটিল যুক্তিবিদ্যা নির্ভর।
11. গৌতম মুনির ন্যায়সূত্র কোন সময়ে রচিত হয়? খ্রিস্টপূর্ব ২য় বা ৩য় শতাব্দী নাগাদ।
12. ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ? তারা দর্শনের ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং বিকাশে মূল ভূমিকা পালন করেন।
13. বাৎস্যায়নের ভাষ্যে কী কী দার্শনিক ধারণা বিশ্লেষণ করা হয়েছে? প্রমাণ, প্রমা, তত্ত্ব এবং যুক্তির ব্যবহার।
14. উদয়নের আত্মতত্ত্ববিবেক গ্রন্থের মূল বিষয়বস্তু কী? আত্মার অস্তিত্ব ও স্বরূপ।
15. গঙ্গেশের তত্ত্বচিন্তামণি কটি ভাগে বিভক্ত? চার ভাগে—প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান, শব্দ।
16. গদাধর ভট্টাচার্যের “শক্তিবাদ” কী ব্যাখ্যা করে? শব্দার্থ নির্ধারণে ‘শক্তি’র ভূমিকা বিশ্লেষণ করে।
17. ন্যায় দর্শনে ‘প্রমাণ’ বলতে কী বোঝানো হয়? সঠিক ও নির্ভরযোগ্য জ্ঞানলাভের উপায়।
18. বৌদ্ধ দর্শনের সঙ্গে ন্যায় দর্শনের কোন কোন বিতর্ক রয়েছে? অনিত্যতা, আত্মতত্ত্ব, এবং প্রমাণপদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক।
19. ন্যায় ভাষ্যগুলিতে ঈশ্বরতত্ত্ব কীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে? যুক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রতিপাদিত হয়েছে (বিশেষত উদয়নে)।
20. গদাধর ভট্টাচার্যের “অনুমানখণ্ড” কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে? অনুমান প্রমাণের ধরন ও প্রকৃতি।
21. ন্যায় দর্শনে শব্দ প্রমাণের গুরুত্ব কতটা? শব্দ প্রমাণের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় জ্ঞান লাভ হয়।
22. বাৎস্যায়ন কোন কোন প্রমাণ স্বীকার করেছেন? চতুর্ভাগ প্রমাণ: প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান, শব্দ।
23. গঙ্গেশ কীভাবে ভাষা ও জ্ঞানের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেছেন? শব্দার্থ নির্ধারণে প্রতীক-প্রবণতা ও অনুমানের ভূমিকা তুলে ধরেছেন।
24. বাচস্পতি মিশ্রের ভাষ্য অন্য দর্শনের সাথে কীভাবে সংযোগ ঘটিয়েছে? তিনি সাংখ্য, যোগ, মীমাংসা প্রভৃতি দর্শনের বিষয় সংযোগ করেছেন।
25. উদয়ন কোন দর্শনের সমন্বয় সাধন করেছেন? ন্যায়-ভাষ্য, ঈশ্বরতত্ত্ব এবং যুক্তিবিদ্যার সমন্বয় করেছেন।
26. ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের শৈল্পিক ও যুক্তিভিত্তিক বৈশিষ্ট্য কী? যুক্তির বিশ্লেষণ, টীকা ও কঠিন দর্শনের সরল ব্যাখ্যা।
27. গঙ্গেশের চিন্তাধারার প্রভাব কাদের উপর পড়েছে? গদাধর, রঘুনাথ শিরোমণি, এবং নব্য ন্যায় দর্শনের উত্তরসূরিদের উপর।
28. গৌতমের সূত্রগুলি কিসের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ? ১৬ পদার্থ বা তত্ত্বের ভিত্তিতে।
29. ন্যায় দর্শনের কোন ভাষ্যকার যুক্তিবিদ্যায় যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছেন? গঙ্গেশ উপাধ্যায়।
30. বাৎস্যায়ন কীভাবে ন্যায় দর্শনের ভিত্তি স্থাপন করেন? সূত্র ব্যাখ্যার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ দর্শনরূপে প্রতিষ্ঠা করেন।
31. নব্য ন্যায়ের সূচনা কখন এবং কোথায় হয়েছিল? ১৩শ শতকে মিথিলা (বিহার) অঞ্চলে।
32. ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের কোন গ্রন্থ সবচেয়ে প্রভাবশালী? তত্ত্বচিন্তামণি (গঙ্গেশ) এবং ন্যায়কুসুমাঞ্জলি (উদয়ন)।
33. গৌতম মুনির ন্যায়সূত্র কোন দর্শনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে? ন্যায়-ভাষ্য, নব্য ন্যায় এবং যুক্তিবিদ্যার ভিত্তি।
34. গদাধরের কাজ কোন ভাষ্যকারদের উত্তরসূরি? গঙ্গেশ, উদয়ন এবং বাচস্পতির ধারার অনুসরণ।
35. উদয়নের ঈশ্বর প্রমাণের পদ্ধতি কী ছিল? কার্যকারণ সম্বন্ধে যুক্তির ব্যবহার।
36. ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের প্রভাব কোথায় দেখা যায়? দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, ভাষাবিজ্ঞান, ধর্মচিন্তা।
37. উদ্দ্যোতকার কোন বৌদ্ধ দার্শনিকদের সমালোচনা করেন? ধর্মকীর্তি, নাগার্জুন, দিগ্নাগ প্রমুখ।
38. বাচস্পতির দৃষ্টিতে প্রমাণতত্ত্ব কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল? অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; তা দর্শনের ভিত্তি।
39. গঙ্গেশের কাজ কীভাবে পরবর্তী দর্শনের ভিত্তি স্থাপন করে? বিশ্লেষণধর্মী যুক্তিবিদ্যার ধারা শুরু হয়।
40. গদাধর কীভাবে শক্তিবাদকে বিশ্লেষণ করেছেন? শব্দার্থ নির্ধারণে শক্তির ভূমিকা প্রমাণ করেন।
41. ন্যায় দর্শনে আত্মার অস্তিত্ব কিভাবে প্রতিপাদিত হয়েছে? অভিজ্ঞতা ও যুক্তির মাধ্যমে।
42. ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের মধ্যে কারা সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিলেন? বাৎস্যায়ন, উদয়ন, গঙ্গেশ, গদাধর।
43. ন্যায় দর্শনের সূত্রগুলি এত সংক্ষিপ্ত কেন? স্মরণে রাখার সুবিধার্থে।
44. ন্যায় দর্শনের কোন ভাষ্যকার সবচেয়ে বিশ্লেষণাত্মক ছিলেন? গঙ্গেশ উপাধ্যায়।
45. প্রাচীন ও নব্য ন্যায় ভাষ্যকারদের দৃষ্টিভঙ্গির মূল পার্থক্য কী? বিশ্লেষণের গভীরতা ও যুক্তির মাত্রা।
46. ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের কাজ কীভাবে আধুনিক যুক্তিবিদ্যায় প্রাসঙ্গিক? যুক্তির নীতিমালা ও বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাচর্চা রয়ে গেছে।
47. গৌতম মুনির পরে প্রথম ভাষ্যকার কে ছিলেন? বাৎস্যায়ন।
48. উদয়নের ঈশ্বর প্রমাণ বর্তমান দর্শনে কতটা প্রভাব ফেলেছে? মৌলিক দর্শনচিন্তার দিক থেকে তা আজও গুরুত্বপূর্ণ।
49. ভাষ্যকারদের কাজ ছাড়া কি ন্যায়সূত্র বোঝা সম্ভব? না, ভাষ্য ছাড়া সূত্র বোঝা কঠিন।
50. ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকারদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কোথায় নিহিত? যুক্তিবিদ্যা, দর্শন ও শিক্ষাচর্চায় তাদের প্রভাব অনস্বীকার্য।


20 MCQ with Answer and Bengali Explanation: ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার


20 MCQ with Answer and Bengali Explanation: ন্যায় দর্শনের ভাষ্যকার

1. ন্যায়সূত্র গ্রন্থের রচয়িতা কে?
A) গৌতম B) বাৎস্যায়ন C) উদয়ন D) গঙ্গেশ
উত্তর: A) গৌতম

2. বাৎস্যায়নের ভাষ্যগ্রন্থটির নাম কী?
A) ন্যায়ভাষ্য B) ন্যায়বিন্দু C) ন্যায়কুসুমাঞ্জলি D) তত্ত্বচিন্তামণি
উত্তর: A) ন্যায়ভাষ্য

3. উদয়নের ঈশ্বরপ্রমাণ সংক্রান্ত গ্রন্থের নাম কী?
A) আত্মতত্ত্ববিবেক B) ন্যায়ভাষ্য C) ন্যায়কুসুমাঞ্জলি D) যুক্তিপর্ণম
উত্তর: C) ন্যায়কুসুমাঞ্জলি

4. নব্যন্যায় দর্শনের প্রবর্তক কে?
A) গদাধর B) গঙ্গেশ C) বাচস্পতি D) উদয়ন
উত্তর: B) গঙ্গেশ

5. “তত্ত্বচিন্তামণি” গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
A) বাৎস্যায়ন B) গদাধর C) গঙ্গেশ D) উদয়ন
উত্তর: C) গঙ্গেশ

6. গদাধর ভট্টাচার্য কোন দর্শনের ভাষ্যকার ছিলেন?
A) বেদান্ত B) সাংখ্য C) নব্যন্যায় D) মীমাংসা
উত্তর: C) নব্যন্যায়

7. উদয়ন কোন দার্শনিক শত্রুর বিরুদ্ধে যুক্তি প্রদান করেন?
A) জৈন B) বৌদ্ধ C) সাংখ্য D) বেদান্ত
উত্তর: B) বৌদ্ধ

8. “নব্যন্যায়” শব্দটি কোন ভাষ্যকারের সময় প্রথম ব্যবহৃত হয়?
A) গঙ্গেশ B) উদয়ন C) গৌতম D) গদাধর
উত্তর: A) গঙ্গেশ

9. উদয়নের রচিত “আত্মতত্ত্ববিবেক” গ্রন্থটি কিসের উপর রচিত?
A) ঈশ্বর B) আত্মা C) শব্দ D) প্রমাণ
উত্তর: B) আত্মা

10. “ন্যায়ভাষ্য” কিসের ভাষ্য?
A) বেদ B) গৌতমের ন্যায়সূত্র C) উপনিষদ D) মীমাংসা সূত্র
উত্তর: B) গৌতমের ন্যায়সূত্র

11. “তর্কভাসা” কে রচনা করেছেন?
A) গঙ্গেশ B) গদাধর C) কেশব মিশ্র D) বাচস্পতি
উত্তর: C) কেশব মিশ্র

12. “তত্ত্বপল্লব” কোন দর্শনের গ্রন্থ?
A) বেদান্ত B) মীমাংসা C) ন্যায় D) চার্বাক
উত্তর: C) ন্যায়

13. উদয়নের ঈশ্বরপ্রমাণ কোন গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে?
A) ন্যায়ভাষ্য B) ন্যায়কুসুমাঞ্জলি C) তত্ত্বচিন্তামণি D) আত্মতত্ত্ববিবেক
উত্তর: B) ন্যায়কুসুমাঞ্জলি

14. বাচস্পতি মিশ্র কোন দর্শনের ব্যাখ্যায় বিশেষ কৃতিত্বের অধিকারী?
A) ন্যায় ও মীমাংসা B) বৌদ্ধ C) যোগ D) বৈশেষিক
উত্তর: A) ন্যায় ও মীমাংসা

15. গৌতমের সূত্রে কটি প্রমাণ গ্রহণ করা হয়েছে?
A) ৬টি B) ৪টি C) ৩টি D) ৫টি
উত্তর: D) ৫টি

16. গদাধর কোন গ্রন্থে শক্তিবাদ বিশ্লেষণ করেছেন?
A) শক্তিপৰীেক্ষ B) শক্তিবাদখণ্ডন C) তত্ত্বচিন্তামণি D) ন্যায়লীলাবতী
উত্তর: A) শক্তিপরীক্ষা

17. গদাধরের “অনুমানখণ্ড” বিষয়বস্তু কী?
A) ঈশ্বর B) শব্দ C) অনুমান D) আত্মা
উত্তর: C) অনুমান

18. ন্যায়দর্শনে “প্রত্যক্ষ” প্রমাণের ব্যাখ্যা সবচেয়ে আগে কে করেছেন?
A) গঙ্গেশ B) উদয়ন C) গৌতম D) বাৎস্যায়ন
উত্তর: C) গৌতম

19. “ন্যায়সূত্র” কোন ভাষায় রচিত?
A) পালি B) সংস্কৃত C) প্রাকৃত D) অপভ্রংশ
উত্তর: B) সংস্কৃত

20. গৌতমের ন্যায়সূত্র মূলত কতটি অধ্যায়ে বিভক্ত?
A) ৪টি B) ৫টি C) ১০টি D) ১৬টি
উত্তর: A) ৫টি



উদ্ধৃতিসূচী




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال